তমোহন উত্তরবঙ্গের অন্যতম ভারত সরকারের পি.আর.জি.আই কর্তৃক রেজিস্ট্রেশন প্রাপ্ত সাহিত্য ও সংস্কৃতি বিষয়ক বার্ষিক গবেষণামূলক মুদ্রিত পত্রিকা। পাশাপাশি লেখক-পাঠকদের অনুরোধে অনলাইন ডিজিটাল ওয়েবপত্র হিসেবে আমাদের আত্মপ্রকাশ। সারাবছর জুড়ে পৃথিবীর যেকোনও প্রান্ত থেকে তমোহনে লিখতে ও পড়তে পারবেন; পাশাপাশি দেশের যে কোনও প্রান্ত থেকে তমোহন ক্রয় করতে পারবেন। আপডেট পেতে আমাদের সাথে সামাজিক মাধ্যম ও ওয়েবসাইটে যুক্ত থাকুন। প্রকাশিত সংখ্যার বিবরণ : ১. (২০২৩-২৪) : তমোহন, ময়নাগুড়ির ইতিহাস, প্রথম বর্ষ, প্রথম সংখ্যা, নভেম্বর ২০২৩, ২. (২০২৪-২৫) : তমোহন, সাহিত্য ও ইতিহাসের পাতায় উত্তরবঙ্গ, দ্বিতীয় বর্ষ, দ্বিতীয় সংখ্যা, জানুয়ারি ২০২৫

পেডিকিওর | মানসী কবিরাজ | অণুগল্প ১১

রিটার্ন মেসেজকে নাগাড়ে বিলম্বিত লয়ে বাজতে শুনে মগজ টের পাচ্ছিল সলতেটা পাকানো চলছে। ব্রেকআপের বাতি জ্বলল বলে । কিন্তু কে আর মগজ খুঁড়ে কঠিন সত্যি শুনতে ভালোবাসে! কাজেই ইনবক্সে দায়সারা রিপ্লাই, শম্বুক রিপ্লাই, নো রিপ্লাই কিছুই গায়ে না মেখে সটান গীতার শ্লোকে– কর্মণ্যেবাধিকারস্তে মা ফলেষু কদাচন।  ইনবক্স হোয়া’র নিকুচি করে ভয়েস কলের শুরুয়াৎ। আঠেরো পর্বের নাছোড় রিং টোন শেষে প্রেমিকের টকে যাওয়া গলা 'কী করব ডিয়ার নেটওয়ার্ক কাজ করছে না ঠিক ভাবে' হায় হায় কী দিনকাল এলো! শেষমেশ প্রেমও জালে (নেটে) জড়াল! এদিকে আমার আবার সফিস্টিকেশনের বড়ি গিলে গিলে ধেড়ে হওয়া। প্রেমের খিদেতে মনে গামছা বাঁধলেও মুখ ফুটে থুড়ি মোবাইল খুঁটে কান্নাভেজা সেলফিটাও পাঠাতে পারছি না। কিন্তু ঐ যে আমার নচ্ছার মগজ। সে দিল একখান জম্পেশ ক্লু।

সেই যে কিছুদিন আগে একটা অচেনা নম্বর থেকে, ধাঁ করে কল এসেই সাঁ করে কেটে গেছিল। ট্রু কলারে প্রেমিক বাবাজির নাম দেখেই তুরন্ত মেসেজ― কী গো আরেকটা সিম নিয়েছ জানাওনি! সে প্রথমে আকাশ থেকে পড়-পড় পরক্ষণেই চোটপাটে সড়গড়– দুজন মানুষের কী এক নাম হতে পারে না! যাহ্‌ বাবা শেষে কিনা আমাকেই সন্দেহবাতিক দেগে দেওয়া! কেস রিওপেন করে চালু হলো 'মিশন অনুসন্ধান'। অপারেশনে নামতেই চক্ষু চড়কগাছ। আমার প্রেমিক প্রদত্ত শোকজ অনুযায়ী সেই যে নেমসেক। দেখি তার হোয়া’র স্ট্যাটাসও সারাদিন শীতঘুমে থাকলেও রাত বারোটা বাজতেই ফোঁসস্ শুরু করে। ফণা তোলা থাকে ঘণ্টা দুই। তারপর গর্তে ঢুকে আবারও শীতঘুম। যেমনটা কিনা আমার প্রেমিকের হোয়া’র স্ট্যাটাসেও হত (আমার সঙ্গে চ্যাট চলাকালীন)। যেন নেমসেক নয় পুরো রথের মেলায় বিছড়ে যাওয়া জড়ুয়া ভাই! বেচারি হৃদয় আমার! চারশ-চল্লিশ ভোল্টে ধক ধক করনে লাগা। আমার জন্য একটা কবর খোঁড় সর্বংসহা মন্ত্রেও বশ মানে কই!

বিরহের সেনসেক্স শীর্ষ ছুঁতেই আলমারি থেকে বেরিয়ে এলো দোপাট্টারা। ফোল্ডিং ল্যাডারটাও চলে এলো সিলিং ফ্যানের পাদদেশে। জাস্ট ঝুলে পড়া বাকি। আর ঠিক সেই মুহূর্তেই মনে পড়ে গেল... মনে পড়ে গেল গত সপ্তাহে তো পেডিকিওর  করাইনি! শুনেছি ঝুলন্ত লাশের পায়ের উপরেই নাকি আগে সবার চোখ পড়ে। কী সর্বনাশ! তাহলে আমার পাশের ফ্ল্যাটের সেই শান্ত চিবুক কবিটির কী হবে? এই হতশ্রী চরণ কমলে “দেহি পদ পল্লব মুদারম“ বলে কীভাবে সে শেষ অঞ্জলি দেবে! 

Comments

Popular Posts

Tamohan, Govt. of India Registration Number (PRGI) WBBEN/25/A1160, New Genaration Acclaimed Bengali Literary Research Journal (Language, Literature & Cultural Studies) & Independent Publication. Maynaguri, Jalpaiguri, West Bengal, India. Estd. 2023.