তমোহন উত্তরবঙ্গের অন্যতম ভারত সরকারের পি.আর.জি.আই কর্তৃক রেজিস্ট্রেশন প্রাপ্ত সাহিত্য ও সংস্কৃতি বিষয়ক বার্ষিক গবেষণামূলক মুদ্রিত পত্রিকা। পাশাপাশি লেখক-পাঠকদের অনুরোধে অনলাইন ডিজিটাল ওয়েবপত্র হিসেবে আমাদের আত্মপ্রকাশ। সারাবছর জুড়ে পৃথিবীর যেকোনও প্রান্ত থেকে তমোহনে লিখতে ও পড়তে পারবেন; পাশাপাশি দেশের যে কোনও প্রান্ত থেকে তমোহন ক্রয় করতে পারবেন। আপডেট পেতে আমাদের সাথে সামাজিক মাধ্যম ও ওয়েবসাইটে যুক্ত থাকুন। প্রকাশিত সংখ্যার বিবরণ : ১. (২০২৩-২৪) : তমোহন, ময়নাগুড়ির ইতিহাস, প্রথম বর্ষ, প্রথম সংখ্যা, নভেম্বর ২০২৩, ২. (২০২৪-২৫) : তমোহন, সাহিত্য ও ইতিহাসের পাতায় উত্তরবঙ্গ, দ্বিতীয় বর্ষ, দ্বিতীয় সংখ্যা, জানুয়ারি ২০২৫

সম্পাদকীয় ১ | ঋষভ চক্রবর্ত্তী

উনিশ বছর বয়স থাকতেই আমি প্রথম 'তমোহন'-এর সম্পাদনা শুরু করি। বড্ড ভয় হয়েছিল সেই সময়। আদৌ কি পারবো আমি? তবুও তখন লক্ষ্য একটাই ছিল- উত্তরবঙ্গের ইতিহাস, সাহিত্য ও সংস্কৃতিকে লিপিবদ্ধ করা এবং আরও বৃহৎ পরিসরের মানুষের কাছে তা পৌঁছে দেওয়া। উত্তরবঙ্গ আমার কাছে বরাবরই প্রাণের স্পন্দন। কিন্তু তমোহন শুধু উত্তরবঙ্গের পরিসরে আর থাকছে না, বৃহৎ সাহিত্যজগতে পাড়ি দিয়েছে তমোহন। এবারে থাকবে না কোনও জেলার গণ্ডি, কিংবা টেনে দেওয়া সীমান্তের বেড়াজাল। শুধুমাত্র উত্তরবঙ্গ নয়, সমগ্র বাংলার লেখকদের নিয়ে আমরা কাজ শুরু করলাম। তমোহনের লিখতে পারবেন সবাই। সাহিত্য ও সংস্কৃতি বিষয়ক বার্ষিক মুদ্রিত গবেষণামূলক পত্রিকার উদ্যোগে আসন্ন পুজোয় সাহিত্যের একটি ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম অর্থাৎ ওয়েবসাইট নির্মাণ করা হয়েছে। বিশেষ বিশেষ সংখ্যা প্রকাশ পাবে এখন থেকে ডিজিটাল মাধ্যমেও। মূলত 'তমোহন'-এর সূচনাপর্বে আমি আনন্দ চন্দ্র কলেজে বাংলা সাম্মানিকের তৃতীয় বর্ষে পড়তাম। সেই সময় আমার বাংলা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ডঃ প্রসাদ রায় আমার মুখে 'তমোহন' সম্পাদনার কথা শুনে প্রচুর সাহস জুগিয়েছিলেন। একই সাথে পাশে পেয়েছিলাম বহু বহু মানুষদের। সেই ঋণ আমি কখনও শোধ করতে পারবো না।

মূলত 'তমোহন'-এর প্রথম সংখ্যাটিতে আমার প্রাণের শহর 'ময়নাগুড়ি'-র ইতিহাসকে খুঁড়ে বের করার চেষ্টা করেছিলাম। অদ্ভুত বিষয় সেই বছরই আনুষ্ঠানিক প্রকাশের প্রায় তিন দিনের মধ্যেই একশো কপি বই বিক্রি হয়ে গিয়েছিল। পরবর্তীতে অবশ্য আমাদের আরও পঞ্চাশ কপি রি-প্রিন্ট করাতে হয়েছিল। এটা আমাদের কাছে কল্পনাতীত ছিল। তবে এই 'তমোহন'-এর সূচনার পেছনে লুকিয়ে ছিল বিশেষ একটি কারণ। সেই কারণটি ছিল কিছু প্রশ্ন! ময়নাগুড়ি থেকে কোনও পত্রিকার পুজোসংখ্যা বেরোচ্ছে কি? ময়নাগুড়ি থেকে কি আদৌ কোনও গবেষণাধর্মী পত্রিকা প্রকাশিত হচ্ছে? ময়নাগুড়ির ইতিহাস কি লিপিবদ্ধ রয়েছে? উত্তর সহজ। দেখলাম সেই অর্থে একদমই না তো! ঠিক তখনই মাথায় একটি চিন্তা এসেছিল, যে আমরাই কি একটা পত্রিকা প্রকাশ করতে পারি না? ফলে সমগ্র জলপাইগুড়ি জেলার পরিচিত বেশ কিছু প্রবীণ, নবীন ও তরুণ সদস্যদের পরামর্শে তৈরি হয়েছিল 'তমোহন'। এই পত্রিকার সকল সদস্যই বর্তমানে পড়াশুনো অথবা বিভিন্ন পেশার সাথে যুক্ত থাকায়, মাসিক কিংবা ত্রৈমাসিক পত্রিকা প্রকাশ করা সম্ভব হয়ে ওঠে না; সত্যি বলতে যান্মাসিকও সম্ভব নয়। তাই বার্ষিক পত্রিকার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু এখন শুধুমাত্র বার্ষিক পত্রিকাই নয়, আমরা থাকছি ডিজিটাল মাধ্যমেও।

আমি বর্তমানে কাশী হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়, বেনারসে বাংলা বিভাগের স্নাতকোত্তরের ছাত্র। প্রবাসে থেকেই 'তমোহন' নিয়ে কাজ করে যাচ্ছি। স্নাতকোত্তরের পড়াশুনো ও বেশ কিছু গবেষণামূলক লেখালিখির কাজ সামলে, সকল ব্যস্ততার মাঝেও স্পর্ধার সাথে 'তমোহন'-এর দ্বিতীয় সংখ্যার পর প্রথমবার ডিজিটাল মাধ্যমে দীপাবলি সংখ্যার ওয়েবসংস্করণ প্রকাশ পাচ্ছে। স্থানীয় ইতিহাস ও ঐতিহ্য লিপিবদ্ধ করে শুরু হওয়া 'তমোহন' আজ সমগ্র জেলা ও উত্তরবঙ্গের নানাবিধ অনুসঙ্গ নিয়েই কাজ করে চলেছে তাই শুধু নয়, সাহিত্যের বিবিধ শাখা নিয়েও কাজ করে চলেছে। আগামী দিনেও 'তমোহন' এভাবেই উত্তরবঙ্গকে নিয়েই শুধু নয়, পুরো বাংলাকে নিয়ে আরও নতুন নতুন কাজ করতে ইচ্ছুক। ভবিষ্যতে 'তমোহন' অনুবাদ নিয়েও কাজ করতে চলেছে। আমি চাই বিশেষত সমগ্র বাংলার অনালোকিত সাংস্কৃতিক অনুসঙ্গ, লোকসাহিত্য থেকে শুরু করে সংস্কৃতি সর্বাত্মক হোক্। মাভৈ...

সম্পাদক
ঋষভ চক্রবর্ত্তী

Comments

Popular Posts

Tamohan, Govt. of India Registration Number (PRGI) WBBEN/25/A1160, New Genaration Acclaimed Bengali Literary Research Journal (Language, Literature & Cultural Studies) & Independent Publication. Maynaguri, Jalpaiguri, West Bengal, India. Estd. 2023.