সত্যজিৎ যদি আপনি ফিরে আসেন | অর্ণব রায় | কবিতা ৫২
জটায়ুর সবুজ আ্যাম্বাসাডার আর আসেনা ও রাস্তায়,
ফেলুদা এখন আর থাকেন না যে রজনী সেন রোডে
নেমপ্লেটে জমে ধুলো, আর মকাইবাড়ির চায়ের কাপে
ভাসে ভুলে যাওয়া অতীত!
প্রফেসর শঙ্কুর খবর অনেকদিন কেউ জানেনা
আর তাঁর অ্যানাইহিলিন? তা আজ রাষ্ট্রের হাতে
কারণ এযুগে বিজ্ঞানও হার মানে,
দম্ভ আর টাকার কাছে।
‘চারুলতা’ এখন আর লেখালেখি করেন না,
উনি এখন শুধু ইন্সটা স্ক্রল করেন বসে বারান্দায়,
তাঁর পোস্টের ক্যাপশান লিখে দেয় এ. আই. ।
আর আমরা?
আমরা কিনি সাবস্ক্রিপশন,
মিউজিয়ামের মত টিকিট কেটে দেখি
এল ই ডি টিভির ফ্রেমে আটকে থাকা
মেদহীন, মেধাহীন নারীদেহ― এক্সট্রা চিলি সস মাখা!
মুখ থেকে ঝরে লালা, সাথে কমফোর্ট জোনের সন্ধি।
কারণ ‘জন-অরণ্য’ আজও শ্বাপদ শঙ্কুল, প্রাগৈতিহাসিক
সেখানে কেউ কারও বন্ধু নয়, শুধুই ‘প্রতিদ্বন্দ্বী’ !
‘অপুর সংসার’ আজ টু-বি.এইচ.কে ফ্ল্যাটে।
একাই থাকে, ল্যাপটপ ব্যাগে ভরা মৃত কুয়াশা, নিশ্চিন্দিপুরের গন্ধ নিয়ে।
আর বাবার ফটো ফ্রেমে জমে সময়ের ধুলো!
কোনও কোনও রাতে, অপু এখনও মাঝে মাঝে স্বপ্নে দেখে―
সেই রেললাইনের ধার, কাশবন,
যেখানে দিদি আজও হয়তো বসে আছে তার অপেক্ষায়।
এসব ভাবতে ভাবতেই অফিসগামী মেট্রো ঠিক সময়ে ঢোকে প্ল্যাটফর্মে,
হিমশীতল মৃত্যুর মত অমোঘ নিয়মে।
আর গুপী-বাঘা? হ্যাঁ, তারা বেঁচে আছে
হাওয়াই চটির বিজ্ঞাপনে কার্টুন হিসেবে!
গুপী বলে― ‘ছিল বিশপ লেফ্রয় রোড, হল সত্যজিৎ রায় ধরণি,’
বাঘা বলে― “হতেই পারে, বিপুলা এ পৃথিবীর কতটুকু জানি”
চাটুকার বুদ্ধিজীবী বলে― ‘ঠিক, ঠিক, ঠিক।’
সত্যজিৎ,যদি আপনি ফিরে আসেন এই যুগে—
তাহলে হয়তো আপনার ক্যামেরায় ধরা পড়বে
ফেসবুক লাইভে নেশায় মত্ত ‘সীমাবদ্ধ’ সব মুখ কিংবা মুখোশের সারি,
ইনস্টাগ্রাম ফিল্টারে মোড়া ‘তিন কন্যা’,
অপুর চোখে নোটিফিকেশনের নীল আলো!
‘আগন্তুক’ মনমোহন মিত্র হয়তো আত্মহত্যা করতে চাইতেন,
আর বাবার ফটো ফ্রেমে জমে সময়ের ধুলো!
কোনও কোনও রাতে, অপু এখনও মাঝে মাঝে স্বপ্নে দেখে―
সেই রেললাইনের ধার, কাশবন,
যেখানে দিদি আজও হয়তো বসে আছে তার অপেক্ষায়।
এসব ভাবতে ভাবতেই অফিসগামী মেট্রো ঠিক সময়ে ঢোকে প্ল্যাটফর্মে,
হিমশীতল মৃত্যুর মত অমোঘ নিয়মে।
আর গুপী-বাঘা? হ্যাঁ, তারা বেঁচে আছে
হাওয়াই চটির বিজ্ঞাপনে কার্টুন হিসেবে!
গুপী বলে― ‘ছিল বিশপ লেফ্রয় রোড, হল সত্যজিৎ রায় ধরণি,’
বাঘা বলে― “হতেই পারে, বিপুলা এ পৃথিবীর কতটুকু জানি”
চাটুকার বুদ্ধিজীবী বলে― ‘ঠিক, ঠিক, ঠিক।’
সত্যজিৎ,যদি আপনি ফিরে আসেন এই যুগে—
তাহলে হয়তো আপনার ক্যামেরায় ধরা পড়বে
ফেসবুক লাইভে নেশায় মত্ত ‘সীমাবদ্ধ’ সব মুখ কিংবা মুখোশের সারি,
ইনস্টাগ্রাম ফিল্টারে মোড়া ‘তিন কন্যা’,
অপুর চোখে নোটিফিকেশনের নীল আলো!
‘আগন্তুক’ মনমোহন মিত্র হয়তো আত্মহত্যা করতে চাইতেন,
আধুনিক যুদ্ধের নামে, শিশুহত্যার সভ্যতার বীভৎসতা দেখে।
আর হীরক রাজ্যের উদয়ন পণ্ডিতরা?
তাঁদের আপনি খুঁজে পেতেন চাকরীহারা মাস্টারমশাইদের ধর্নায়।
আচ্ছা, এই কবিতাটা যদি সত্যজিৎ পড়তেন,
তাহলে কি তিনি সেই ব্যারিটোন গলায় বলতেন—
‘শেষে একটা ক্লোজ-আপ শট থাকবে ওদের,
যারা এখনও বিশ্বাস করে, সিনেমায় ম্যাজিক আছে?’
আর হীরক রাজ্যের উদয়ন পণ্ডিতরা?
তাঁদের আপনি খুঁজে পেতেন চাকরীহারা মাস্টারমশাইদের ধর্নায়।
আচ্ছা, এই কবিতাটা যদি সত্যজিৎ পড়তেন,
তাহলে কি তিনি সেই ব্যারিটোন গলায় বলতেন—
‘শেষে একটা ক্লোজ-আপ শট থাকবে ওদের,
যারা এখনও বিশ্বাস করে, সিনেমায় ম্যাজিক আছে?’
Comments
Post a Comment