লক্ষ্মী সরস্বতী | সুরঞ্জন বর্মন | অণুগল্প ৯
টুম্পা রায় আর নিতিশ রায় এর স্বপ্ন ছিল দুই কণ্যা সন্তানের। নামকরণ আগেই করেছিল লক্ষ্মী কিংবা সরস্বতী রাখবে। কিন্তু তাদের ফুটফুটে দুই পুত্র সন্তান হয়েছে। তাই কার্তিক ও গনেশ নাম রেখেছে, তাদের বয়সের ব্যবধান তিন বছরের । টুম্পার ছেলেরা ঠাকুমার আদর পায় নাই। ঠাকুরদার আদর পায়। তবে কাজের সূত্রে নিতিশ মালবাজারে থাকায় সবাইকে ওখানে থাকতে হয়। ঘরের কাজ করতে করতে টুম্পা হাপিয়ে গেলে কার্তিক আর গনেশ মিলে মিশে সাহায্য করে। কার্তিক সিভিল ইঞ্জিনিয়ার মাঝে মাঝে তাকে অন্য রাজ্যেও যেতেও হয়, তখন গনেশকে মায়ের সাহায্য করতে হয় তরকারি কাটাকুটি কিংবা ছোটৌখাটৌ বাজার আনতে। আর গনেশ দুটো ছাত্রপড়ায় তারও মোবাইল খরচ বাদে বাকি পয়সা জমা থাকে।
মেঘালয় এ একমাস কাজ শেষ করে আজ কার্তিক বাড়ি ফিরেছে। বলেছে মাকে একটা ফ্রীজ আর ওয়াশিং মেশিন কিনে দেবে আর বাবাকে একটা মোবাইল নিয়ে দেবে। গনেশ বলল― "দাদা একমাস তুই ইএমাই দে পরের মাসে আমি দেব।" টুম্পা আর নিতিশ অনেক খুশি হয়েছে জিনিসগুলো ছেলেরা দিচ্ছে এটা শুনে। আজকে টূম্পার বোন সুরভী আশার কথা কারণ নতুন জিনিসগুলো কিনে টুম্পার ইচ্ছে হরিসভা করবার ইশ্বর কে ধন্যবাদ দেবে।
কার্তিক বলেছে 'বাবা বাজার করবে', তাই আটহাজার টাকা দিয়েছে সে বাবাকে। সূরভী মাসি শুনে অনেক খুশি যে সংসারে ছেলেরা খরচ করে। মায়ের মিক্সার মেশিন ঠিক করছে কার্তিক আর গনেশ সব বাসনপত্র ধুয়ে এনেছে এবং কাচা সবজিগুলো টূকরো করছে যথা সম্ভব। মায়ের কাজ হালকা করে হরিসভার নিমন্ত্রিত লোকজনদের আপ্যায়ন করলো। খিচুড়ি টা মায়ের আর তরকারিটা মাসির রান্না করা। নিমন্ত্রিত লোকজনেরা খুব প্রশংসা করলো। ওদের সুরভী মাসি দিদি জামাইবাবুকে জানালো তোমরা অনেক ভাগ্যবান! গনেশ কার্তিক আজ যেন তোমাদের বাড়ির লক্ষ্মী সরস্বতী...
Comments
Post a Comment