তমোহন উত্তরবঙ্গের অন্যতম ভারত সরকারের পি.আর.জি.আই কর্তৃক রেজিস্ট্রেশন প্রাপ্ত সাহিত্য ও সংস্কৃতি বিষয়ক বার্ষিক গবেষণামূলক মুদ্রিত পত্রিকা। পাশাপাশি লেখক-পাঠকদের অনুরোধে অনলাইন ডিজিটাল ওয়েবপত্র হিসেবে আমাদের আত্মপ্রকাশ। সারাবছর জুড়ে পৃথিবীর যেকোনও প্রান্ত থেকে তমোহনে লিখতে ও পড়তে পারবেন; পাশাপাশি দেশের যে কোনও প্রান্ত থেকে তমোহন ক্রয় করতে পারবেন। আপডেট পেতে আমাদের সাথে সামাজিক মাধ্যম ও ওয়েবসাইটে যুক্ত থাকুন। প্রকাশিত সংখ্যার বিবরণ : ১. (২০২৩-২৪) : তমোহন, ময়নাগুড়ির ইতিহাস, প্রথম বর্ষ, প্রথম সংখ্যা, নভেম্বর ২০২৩, ২. (২০২৪-২৫) : তমোহন, সাহিত্য ও ইতিহাসের পাতায় উত্তরবঙ্গ, দ্বিতীয় বর্ষ, দ্বিতীয় সংখ্যা, জানুয়ারি ২০২৫

পিউলী মুখোপাধ্যায় | গুচ্ছকবিতা ৮

বন্দি 
কতবার পরিবর্তন হয়েছে স্থান-কাল
পাত্র অন্য কেউ হতে পারে কি?
সেই একই জায়গায় ঘুরে বেড়ায় 
বহু ব্যবহৃত সমস্ত শব্দ; 
ঝড়ের বেগে দূরত্ব কমিয়ে
একটু শান্তির জন্য যার দিকে তাকালাম
তার অশান্ত হওয়া আমার ভেতরে ঢুকে
কিছু কিছু অঙ্ক পাল্টে দিল, যদিও
সে রৈখিক গতি হলে আমি আবর্ত!

বাক্যের ইশারায় উষ্ণতা বাড়ছে,
শব্দগুলো নিয়ে খেলা করছি 
ভুল বানানের জাল থেকে বেরিয়ে ঠিক বাগানে, 

যেন লিলি অফ দ্য ভ্যালি!
আটকে ফেরোমোনের ভরপুর সুগন্ধে

উপহার
ট্রেনের হাতল দুলছে, যেন সরল দোলগতি
এই তরঙ্গে লেবুর কাটা টুকরো হাতে হকার 
মানিয়ে নিয়েছে নিজেকে অনেকদিন আগে

আত্মার আবির্ভাব হয়তো লটারি, কেউ
ছড়িয়ে দিয়েছে, পছন্দমতো বসিয়েছে
পৃথিবীর আকাঙ্খিত আগামী ভ্রূণে, সঙ্গে
পরিমাণমতো অ্যাডজাস্টমেন্ট
মাত্রা কম-বেশি হলে অন্তহীন অস্থিরতা 

স্থিতি-গতি সূত্রে কি তুমি আমার ভারসাম্য?
এই অদ্ভুত বিশ্বাসের বিরুদ্ধে ব্রহ্মান্ড রোজ
উদাহরণ আনে, তবু বাঁচি লিলির ছায়ায়।

চেষ্টা
সিসিটিভে ধরা পড়েছে দেওয়ালের চাতক
অদৃশ্য অথচ সারাক্ষণ অপেক্ষায় 
যত্ন, পায়ের স্পর্শে যদি কোনও শব্দ লেখা যায়;
এরকম যান্ত্রিক প্রহরে মন নিয়ে গবেষণা
বিষয়– চোখের বাইরে কাজের কোলাজ, পিছুটান

অপেক্ষা ছাড়া জীবন তো ট্র্যাফিকহীন রাস্তা 
কাজের সমুদ্রে জলচর প্রাণী হয়ে থাকা 
যে ছেড়েছে ডাঙার জীবন, ফিরতে নারাজ
বিরামে ভেসে ওঠা মৃত্যুর সমান, অলৌকিক
তবু কিছু কিছু সকাল যেন রাবীন্দ্রিক 
খোলামেলা আলোচনা, দৃশ্যে ঢাকা গভীর
গোপন অনুভূতি নিয়ে নাড়াচাড়া করার ইঙ্গিত

নির্লিপ্ত প্রাণ থেকে মানুষ হয়ে ওঠার কবিতায়
হাঁটতে হাঁটতে পা যায়
লিলির বাগানে, তেষ্টা মেটায় দর্শনে...

দায়িত্ব
চেনা ভঙ্গি হাত ও পায়ের 
দরজা ভাঙার মতো শব্দ হচ্ছে এখানে
সংস্কার, বিশ্বাস পুড়িয়ে সেই ছাই খামে রাখা
ব্যাগে ঘোরে এদিক-ওদিক, কিন্তু হারায় না

এখন বিনিময় প্রথায় আদানপ্রদান চলে
বেহিসাবি দান সংগ্রহশালার অ্যান্টিক পিস;
এমনকি তুমিও বিরতিকে ছুটি ভেবে নিলে 
ডাক ছাড়াই সাড়া দেওয়া পাখিদের উড়িয়ে… 
তবে ধারণ-ক্ষমতা কমা কিন্ত কমিটমেন্ট নয় 

স্বপ্ন সত্যি, কিছু শব্দ ব্যবহার করার সাহসে 
নির্মমতার যেসব মুহূর্ত রোজ আসে, থাকুক
যখন আমি বর্ণনায় জন্ম দিই তোমাকে 

আশেপাশে অচেনা মানুষদের আত্মীয় ভাবি
যেন সবাই তোমাকে মনোনীত করেছে,
হাত ধরে নিয়ে আসছে  
আমারই খুব যত্নে লাগানো রেইন লিলির কাছে 
জল দিয়ে ফুল ফোটানোর দায়িত্বে!

Comments

  1. খুব ভালো লাগল কবির এই কবিতাগুলি। আরও লিখুন, সমৃদ্ধ করুন পাঠকদের।

    ReplyDelete

Post a Comment

Popular Posts

Tamohan, Govt. of India Registration Number (PRGI) WBBEN/25/A1160, New Genaration Acclaimed Bengali Literary Research Journal (Language, Literature & Cultural Studies) & Independent Publication. Maynaguri, Jalpaiguri, West Bengal, India. Estd. 2023.